শক্তিপীঠের আরেক পীঠ মা যোগাদ্যার সম্পর্কে জানেন কি ??

পৌরাণিক কাহিনী দক্ষযজ্ঞে সতী দেহত্যাগ করলে মহাদেব মৃতদেহ স্কন্ধে নিয়ে উন্মত্তবৎ নৃত্য করতে থাকেন, বিষ্ণু সেই দেহ চক্রদ্বারা ছেদন করেন ৷ সতীর মৃতদেহের খন্ডাংশ একান্নটি স্থানে পতিত হয় ৷ এই একান্নটি স্থান দেবীর পীঠস্থান নামে পরিচিত । ক্ষীরগ্রাম ও এক সতীপীঠ, দেবীর ডান পায়ের আঙুল পড়েছিল এখানে।

বাংলার এক লৌকিক দেবতা ও ৫১ পীঠের এক পীঠের দেবী। তাঁর মন্দির পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের নিকটে ক্ষীরগ্রাম নামক গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালী মন্দির।এছাড়া হুগলীর প্রধান গ্রামদেবতা ষণ্ডেশ্বর জীউ-এর মন্দির চত্বরের মূল মন্দিরের উত্তর দিকে ও একটি যোগাদ্যা দুর্গামন্দির রয়েছে।

অন্নদামঙ্গলে বলা হয়েছে , ‘ক্ষীরগ্রামে ডানি পার অঙ্গুষ্ঠ বৈভব৷ /যুগাদ্যা দেবতা ক্ষীরখণ্ডক ভৈরব৷৷ ’
মানে দেবী যুগাদ্য়া ও ভৈরব ক্ষীরখণ্ডক।

কাটোয়া-বর্ধমান রেলপথে কাটোয়া থেকে ১৭ আর বর্ধমান থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে কৈচর স্টেশন। বাস বা রিকশায় কৈচর থেকে ৪ কিমি যেতে ক্ষীরগ্রামের পশ্চিমে দেবী যোগাদ্যা উমা অর্থাৎ সিংহপৃষ্ঠে আসীন কালো কোষ্ঠীপাথরের দশভুজা মহিষমর্দিনী। মন্দির লাগোয়া ক্ষীরদিঘির জলে দেবীর বাস। বছরে মাত্র ৬ দিন দেবী জল থেকে ডাঙায় ওঠেন। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র দু’ দিন ভক্তরা দেবীর দর্শন পান।

বছরে মাত্র সাত বার ক্ষীরদিঘির জল থেকে উঠে মূল মন্দিরে আসেন দেবী যোগাদ্যা। তবে বছরে মাত্র এক বার বৈশাখী সংক্রান্তির দিনে তাঁর দেখা পান ভক্তেরা।

কথিত আছে, দেবীর ৫১ পীঠের একটি পীঠ হল ক্ষীরগ্রাম। কিন্তু কোনও ভাবে হারিয়ে গিয়েছিল প্রাচীন যোগাদ্যা মূর্তিটি। তার পরে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তি চন্দ যোগাদ্যার মন্দিরটি নির্মাণ করান গ্রামে। সম্ভবত তাঁরই আদেশে হারিয়়ে যাওয়া মূর্তির অনুকরণে দশভুজা মহিষমর্দিনীর একটি প্রস্তর প্রতিমা তৈরি করেন দাঁইহাটের নবীনচন্দ্র ভাস্কর। নতুন তৈরি হওয়া মূর্তিটি অবশ্য বছরের অন্যান্য সময়ে ডুবিয়ে রাখা হত ক্ষীরদিঘির জলেই।কেবল ৩১ বৈশাখ জল থেকে তুলে এনে তা সর্বসমক্ষে রাখা হত। সেই ঐতিহ্য চলছে এথনও। সংক্রান্তিতে সারাদিন পূজিত হন দেবী। পুজো শেষে ভোররাতে দেবীকে ফের ক্ষীরদিঘিতে নামানো হয়। তবে বেশ কয়েক বছর আগে দিঘি থেকে দেবী প্রতিমা চুরি করেছিল দুষ্কৃতীরা। কাটোয়ার কাছে ভাটিগাছা মাঠে অবশ্য তা পাওয়া যায়। এর পরে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জলের তলাতেই একটি মন্দির গড়েন গ্রামবাসীরা।


সেখানকার গ্রামবাসীরা জানান, তাঁদের গ্রামে দেবী যোগাদ্যার পুজো হয় বলে আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে শারোদৎসবও হয় না। প্রচুর বন্দনা-কাহিনীও রয়েছে দেবীকে ঘিরে। লোক গবেষক যজ্ঞেশ্বর চৌধুরী জানান, এই জনপদে অন্তত ৪০টি যোগাদ্যার বন্দনা পুঁথি মিলেছে। তবে তাঁর মতে, সব থেকে আগে যোগাদ্যা বন্দনা লিখেছিলেন কবি কৃত্তিবাস। কবির মতে, রামায়ণের সময়ে মহীরাবণ বধের পরে ভদ্রকালী তথা যোগাদ্যাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেন রামচন্দ্র।

                        🌺জয় মা🌺
আপনার জীবনকে ভক্তিময়, ইতিবাচক ও সুন্দর করে তুলতে আমাদের সাথে থাকুন।

Comments

Popular posts from this blog

খ্রিষ্টানে কনভার্ট করার সকল বিদেশী NGO লাইসেন্স বাতিল করলো অমিত শাহ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য বাংলাদেশি গায়ক নোবেল-এর! আচ্ছা করে ধুয়ে দিলো ভারতীয়রা

অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী (স্যার) কথা কি ভুলে গেছেন সবাই ???