অযোধ্যার মাটিতে মন্দির ছিলো,তার ৭টি প্রমাণ কি কি ?? তা জেনে নিন।

অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে ছিল মন্দির। ৭টি প্রমাণ তুলে ধরলেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা...


১) স্তম্ভ, ভীত এবং কলসি:-

আমরা ভিতরে ঢুকে দেখি মসজিদের ১২টি স্তম্ভ রয়েছে। সেগুলি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকেই তৈরি করা হয়েছিল। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতকের মন্দিরগুলির ভীতে পূর্ণ কলস বা কলসি দেখা যেত। এগুলি আসলে ‘ঘড়া’র স্থাপত্য। যেখান থেকে গাছপালা বেরিয়ে থাকত। হিন্দু মতে সেটি ছিল সম্বৃদ্ধির প্রতীক। এটি অষ্ট মঙ্গল চিহ্ন হিসেবেও পরিচিত ছিল। বাবরি মসজিদের ভিতরও এই ধরনের বস্তু দেখা গিয়েছিল। দেবদেবীর খুঁজে না পাওয়া গেলেও অষ্ট মঙ্গল চিহ্ন ছিল। অর্থাৎ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকেই যে স্তম্ভ তৈরি, তা প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়।


২) টেরাকোটা ভাস্কর্য:-

একাধিক টেরাকোটা ভাস্কর্য সেখানে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। যদি এটি শুধুই মসজিদ হত, সেক্ষেত্রে কখনওই মানুষ বা জন্তুর বর্ণনা সেখানে থাকত না। কারণ ইসলাম মতে তা ‘হারাম’। অর্থাৎ সেখানে মন্দির ছিল। কিন্তু বিবি লাল এই বিষয়গুলিকে তুলে ধরেননি। কারণ আমাদের খননের লক্ষ্য ছিল সেই এলাকার সংস্কৃতিক ক্রম বোঝা।

৩) আরেক স্তম্ভের সন্ধান:-

দ্বিতীয় খননে পঞ্চাশটিরও বেশি স্তম্ভের ভীত পাওয়া গিয়েছিল। মোট ১৭টি সারিতে এই স্তম্ভ পাওয়া গিয়েছিল। এই কাঠামোই প্রমাণ করে দ্বাদশ শতকে বাবরি মসজিদের নিচে মন্দির ছিল।



৪) মন্দির প্রণালী:-

মন্দির প্রণালীও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। দেবদেবীর স্নানের জন্য যে জল ব্যবহৃত হয় তা এই প্রণালীর মধ্যে দিয়েই বয়ে যায়। কুমিরের মুখের মতো এই প্রণালী মকর প্রণালী হিসেবেও পরিচিত। কুমির হল গঙ্গার প্রতীক। গর্ভ গৃহে প্রবেশের আগে একপ্রান্তে এক মহিলা কুমিরের উপর দাঁড়িয়ে থাকে এবং অন্যদিকে আরেক মহিলাকে কচ্ছপের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। অর্থাৎ গঙ্গা-যমুনা বা সরস্বতীতে স্নান করে তবেই ঈশ্বরের গৃহে আপনি প্রবেশ করেন। হিন্দু মতে এই স্নানেই পাপ ধুয়ে যায়। এই মকর প্রণালীও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।

৫) মন্দির কলস ও শিখারা:-

মন্দিরের উপর কলসের ঠিক নিচে যে স্থাপত্য থাকে, তা অমলকা নামে পরিচিত। উত্তর ভারতের মন্দিরে এর নিচে গ্রীবা ও শিখারার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই স্থান থেকেও তেমনই শিখারা খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।

৬) টেরাকোটার জিনিস:-

২৬৩টি টেরাকোটা দেবদেবীর পাশাপাশি পুরুষ ও মহিলার শরীরের কাঠামোও পাওয়া গিয়েছে। এটি শুধু মসজিদ হলে এসমস্ত বস্তু পাওয়া সম্ভব হত না।



৭) বিষ্ণু হরি শীলা ফলক:-

এসব ছাড়াও বিষ্ণু হরি শীলা ফলক লিপিও জমির দুই জায়গা থেকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। মসজিদ ধ্বংসের পর খননকাজে তা উঠে আসে। এখান থেকে পাওয়া তথ্যদিতে প্রমাণিত এখানে ভগবান বিষ্ণুর মন্দির ছিল। যিনি বালিকে বধ করেছিলেন।

অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। বিতর্কিত জমির মালিকানা পেল রাম জন্মভূমি ন্যাস। কিন্তু, আপাতত বিতর্কিত ওই জমির তত্ত্বাবধানে থাকবে একটি ট্রাস্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রায়দানের সময় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) রিপোর্টের উপর। যারা প্রমাণ দেখিয়েছিল অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে দেবদেবীর অস্তিত্ব ছিল।

১৯৭৬-৭৭ সালে এএসআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল বিবি লালের সঙ্গে প্রথমবার এই জমির খননে অংশ নিয়েছিলেন এএসআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর কেকে মহম্মদ। সেই দলে একমাত্র মুসলিম সদস্য ছিলেন মহম্মদই। তিনিই জানান, এই জমিতে মন্দির ছিল, তা প্রমাণিত। এরপর ২০০৩ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্টের লখনউ বেঞ্চের নির্দেশে দ্বিতীয়বার খননকার্য হয়। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরবর্তীকালে সেই সময় রাডার (গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার) ব্যবহার করে চলে গবেষণা।

Comments

Popular posts from this blog

খ্রিষ্টানে কনভার্ট করার সকল বিদেশী NGO লাইসেন্স বাতিল করলো অমিত শাহ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য বাংলাদেশি গায়ক নোবেল-এর! আচ্ছা করে ধুয়ে দিলো ভারতীয়রা

অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী (স্যার) কথা কি ভুলে গেছেন সবাই ???